আগৈলঝাড়ায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিউবওয়েলে বিষ প্রয়োগ করেছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবদের মাঝে চরম আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রতিবাদে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আগৈলঝাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগ ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে রত্নপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মন্দিরা বিশ্বাস ও বিথী চৌধুরী বিদ্যালয়ের গভীর টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে গেলে পানিতে তীব্র দুর্গন্ধ ও অস্বাভাবিক সাদা রঙ দেখতে পায়। এসময় টিউবওয়েলের পাশেই একটি বিষের বোতল (নাইট্রো ৫০৫ ইসি) পরে থাকতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষন পূর্বে বিদ্যালয়ের নির্মানাধীন ভবনের ঠিকাদারের রান্নার কাজের মহিলা শান্তি বেগম টিউবয়েলের পানি রান্নার কাজে ব্যবহার করেছেন। বিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান শিক্ষককে মোবাইলে জানান। পানির গন্ধে সন্দেহ হলে সেটি ব্যবহার বন্ধ করে দিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে জানান।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ে এমন ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি। এর পেছনে পূর্ব বিরোধ, শত্রুতা বা কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় অভিভাবক মহলে ব্যাপক আতঙ্ক ও ক্ষোভ দেখা দেয়। এঘটনার প্রতিবাদের রতœপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দোষী ব্যাক্তির বিচার চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর রত্নপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.মোতালেব হোসেন সোমবার আাগৈলঝাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগের অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দেওয়া হয়েছে।
এঘটনায় আগৈলঝাড়া থানার এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর রত্নপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ওই টিউবয়েলের পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসে।
এব্যাপারে রত্নপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.মোতালেব হোসেন বলেন, আমি বারপাইকা এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে ছিলাম। বিদ্যালয় থেকে আমাকে ফোন করে ঘটনাটি জানিয়েছে। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। এবং তার অনুলিপি আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়েছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.মাহাবুবুর রহমান বলেন, রত্নপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
এব্যাপারে উপজেলা জনস্বাস্থ্য সহকারী প্রকৌশলী এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। টিউবওয়েলে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। ওই টিউবওয়েল আমাদের দপ্তর থেকে ওয়াশ করে দেওয়া হবে।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.অলিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। স্কুল কর্তৃপক্ষ মামলা করলে তদন্ত করে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিন জানান, রত্মপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঘটনাটি শুনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা করলে পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।